বস্তুতঃ তুমিই আমার মর্ম রচনা করিয়াছ; তুমি মাতৃগর্ভে আমাকে বুনিয়াছিলে। আমি তোমার স্তব করিব, কেননা আমি ভয়াবহরূপে ও আশ্চর্যরূপে নির্মিত; তোমার কর্ম সকল আশ্চর্য, তাহা আমার প্রাণ বিলক্ষণ জানে।
ফলতঃ তাঁহার অদৃশ্য গুণ, অর্থাৎ তাঁহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্যে বোধগম্য হইয়া দৃষ্ট হইতেছে, এই জন্য তাঁহাদের উত্তর দিবার পথ নাই।
তুমি কি জ্ঞাত হও নাই? তুমি কি শুন নাই? অনাদি অনন্ত ঈশ্বর, সদাপ্রভু, পৃথিবীর প্রান্ত সকলের সৃষ্টিকর্তা ক্লান্ত হন না, শ্রান্ত হন না; তাঁহার বুদ্ধির অনুসন্ধান করা যায় না।
তিনি সকলই যথাকালে মনোহর করিয়াছেন, আবার তাহাদের হৃদয়মধ্যে চিরকাল রাখিয়াছেন; তথাপি ঈশ্বর আদি অবধি শেষ পর্যন্ত যে সকল কার্য করেন, মনুষ্য তাহার তত্ত্ব বাহির করিতে পারে না।
পরে ঈশ্বর কহিলেন, আমরা আমাদের প্রতিমূর্তিতে, আমাদের সাদৃশ্যে মনুষ্য নির্মাণ করি; আর তাহারা সমুদ্রের মৎস্যদের উপরে, আকাশের পক্ষীদের উপরে, পশুগণের উপরে, সমস্ত পৃথিবীর উপরে, ও ভূমিতে গমনশীল যাবতীয় সরীসৃপের উপরে কর্তৃত্ব করুক।
তিনি আকাশে আপন উচ্চ কক্ষ সকল নির্মাণ করিয়াছেন, পৃথিবীর ঊর্ধ্বে আপন চন্দ্রাতপ স্থাপন করিয়াছেন; তিনি সমুদ্রের জলসমূহকে ডাকিয়া স্থলের উপরে ঢালিয়া দেন; সদাপ্রভু তাঁহার নাম।
পরে স্বর্গে ও পৃথিবীতে ও পৃথিবীর নিচে ও সমুদ্রের উপরে যে সকল সৃষ্ট বস্তু, এবং এই সকলের মধ্যে যাহা কিছু আছে, সমস্তেরই এই বাণী শুনিলাম, ‘যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার প্রতি ও মেষশাবকের প্রতি ধন্যবাদ ও সমাদর ও গৌরব ও কর্তৃত্ব যুগপর্যায়ের যুগে যুগে বর্তুক।’
ধিক্ তাহাকে, যে আপন নির্মাতার সহিত বিবাদ করে; সে ত মাটির খোলার মধ্যবর্তী খোলা মাত্র। মৃত্তিকা কি কুম্ভকারকে বলিবে, ‘তুমি কি নির্মাণ করিতেছ?’ তোমার রচিত বস্তু কি বলিবে, ‘উহার হস্ত নাই?’
ধন্য আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতা; তিনিই করুণা-সমষ্টির পিতা এবং সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর; তিনি আমাদের সমস্ত ক্লেশের মধ্যে আমাদিগকে সান্ত্বনা করেন, যেন আমরা নিজে ঈশ্বর-দত্ত যে সান্ত্বনায় সান্ত্বনা প্রাপ্ত হই, সেই সান্ত্বনা দ্বারা সমস্ত ক্লেশের পাত্রদিগকে সান্ত্বনা করিতে পারি।